পাবেল আহমেদ,শাল্লা
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় হঠাৎ করে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে চোরের উপদ্রব। রাত নামলেই এখানের গ্রামগুলোতে দেখা দিচ্ছে চোরের আতঙ্ক। প্রতিদিনই কোন না কোন গ্রামে ঘটছে চুরির ঘটনা। পাহারাদার নিয়োগ করেও ঠেকানো যাচ্ছেনা চুরি। বিভিন্ন গ্রামের তথ্য মতে গত দুই মাসে ছোট বড় প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টি চুরির ঘটনা ঘটছে।
নগদ টাকা,স্বর্ণালংকার, কৃষকের গরু, নৌকা,হাস থেকে শুরু করে ঘরের মালামাল নিয়ে যাচ্ছে চুরি করে। চোরেরা হানা দিচ্ছে ছোটখাটো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও। হঠাৎ চোরের এমন উপদ্রবে আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকাবাসী মধ্যে। চুরির পুনরাবৃত্তি বা হয়রানি এড়াতে অধিকাংশ ঘটনায় মামলা হয় না থানায়।
জানাযায় ১০ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে চুরির ঘটনা ঘটে উপজেলার ৪নং শাল্লা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জামান চৌধুরী ফুল মিয়ার বাড়িতে। তিনি শ্রীহাইল গ্রামের বাসিন্দা। নগদ সাত লক্ষ টাকা, স্বর্ণালংকার ও দুটি বড় ব্যাটারি সহ প্রায় ১২-১৫ লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে যায় চোরেরা। গত ৫ জুলাই মেধা গ্রামের আহাদ নুর মিয়ার একটি বড় মেশিন চুরি হয়ে যায়। হাতেনাতে চোর ধরা পড়লেও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় নি পুলিশকে।
গত ৮ জুলাই কাশীপুরের মনির মিয়ার বাড়ি থেকে বড় বড় চারটি গরু,পরেরদিন একই গ্রামের মামুন মিয়ার দুটি বড় মেশিন সহ একটি নৌকা, ১৪ জুলাই সোমবার উপজেলার মনুয়া গ্রামের আবু তাহেরের ঘর থেকে তার ধান ও গরু বিক্রির প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা চুরি হওয়া সহ প্রতিদিন এরকম অহরহ চুরির ঘটনা ঘটে চলেছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। বিশেষ করে যাদের গরু চুরু হয়েছে এরকম অধিকাংশ ভুক্তভোগীরা গরীব ও ঋণগ্রস্ত হওয়ায় অনেকটাই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা।
স্থানীয়রা বলছেন, পেশাদার চুরের পাশাপাশি অপেশাদার অনেকেই চুরির সাথে যুক্ত হয়ে পড়েছে। মাদকের অবাধ বিস্তারের কারণে দিনদিন উঠতি বয়সী তরুণরা চুরিতে আসক্ত হচ্ছে। নেশার টাকার জোগান দিতেই জড়িয়ে পড়ছে চুরিসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ডে।
ভুক্তভোগী সাবেক চেয়ারম্যান জামান চৌধুরী ফুল মিয়া বলেন,দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক অবনতি হচ্ছে। চোরের উপদ্রবের কারনে গ্রামের মানুষেরা তাদের জানমালের নিরাপত্তা পাচ্ছে না। তিনি বলেন আমার বাড়িতে চুরির ঘটনায় থানায় দরখাস্ত দেওয়া হয়েছে।
শাল্লার সচেতন নাগরিক আনিসুল হক চৌধুরী মুন বলেন, হঠাৎ করে চুরি বেড়ে যাওয়া খুবই উদ্বেগের বিষয়। নিজের জান এবং মাল নিয়ে আতঙ্কে আছে হাওর পাড়ের মানুষ। তবে পুলিশের নিরবতার কারনে চুরি আরো বেড়ে চলছে। চুরের গ্রাম কামারগাও থেকে চুরি হওয়া বিভিন্ন জিনিস মানুষ টাকার বিনিময়ে ফিরত আনার ঘটনা আছে। পেশাদার চুরের পাশাপাশি অনেকই কাজ না থাকার কারনে চুরির সাথে যুক্ত হয়ে পড়েছে। এবিষয়ে পুলিশকে আরো কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি ছুটিতে রয়েছি। এব্যাপারে আমাদের টিম আইনী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন চুরির বিষয়টি আমরা কঠোরভাবে দেখছি।
Leave a Reply